১০ মে ২০২৪, ০২:৫২ পূর্বাহ্ন, ১লা জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি, শুক্রবার, ২৬শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
আবরারের ভাবিকেও পিটিয়ে জখম করল পুলিশ

আবরারের ভাবিকেও পিটিয়ে জখম করল পুলিশ

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গ্রামবাসীর তোপের মুখে রায়ডাঙ্গা গ্রামে থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম।

শেষ পর্যন্ত আবরারের বাড়িতে না ঢুকে সামনের রাস্তা থেকে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রহরায় তিনি দ্রুত চলে যান।

ভিসিকে সরিয়ে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়।

পুলিশ আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজকে মারধর করে এবং আবরারের মামাতো ভাবি তমাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে বলে অভিযোগ করে আবরারের পরিবার। তাকে কুমারখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামে এ সব ঘটনা ঘটে।

আবরারের ছোট ভাই ফাইয়াজ বলেন, পুলিশ আমার গায়ে হাত দিয়েছে। বুকে গুতো মেরেছে। কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান নিজে আমাকে মেরেছে। আমার এক ভাইকে পিটিয়ে মেরেছে, এবার পুলিশ কী আমাকে মারবে?

আহত অবস্থায় ফাইয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, আমি ভিসি স্যারের নিকট জানতে চাইলাম আমার ভাইয়ার খুনিদের এখনও কেন বহিষ্কার করা হয়নি। এ সময় তিনি নীরব ছিলেন, আমি আমার ভাইয়ের হত্যা সম্পর্কে আরও প্রশ্ন করতেই তিনি কোনো জবাব না দিয়ে গাড়িতে উঠে চলে যাওয়ার মুহূর্তে অতিরিক্ত পুলিশ সপুার মোস্তাফিজুর রহমান আমার বুকের উপর হাত দিয়ে মারাত্মকভাবে আঘাত করেন। এতে আমি মারাত্মকভাবে আঘাত পেয়েছি।

তিনি বলেন, আমার মামাতো ভাবিকে প্রকাশ্যে শ্লীলতাহানি করা হয় এবং এলাকাবাসীকে ধরপাকর করা হবে বলে পুলিশ হুমকি প্রদর্শন করায় আমরা আতংকে আছি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ফাইয়াজ বলেন, আমার ভাইয়াকে হত্যা করা হয়েছে আর আমাদের পুলিশ হুমকি দিচ্ছে। প্রয়োজনে আমিও জীবন দিতে প্রস্তুত রয়েছি।

ফাইয়াজ বলেন, ভিসি দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে আমাদের বাড়ির দরজার কাছ থেকে ফিরে গিয়ে আমাদের কষ্টের মধ্যে ফেলে গেল। এই ভিসির ক্ষমতায় থাকার কোনো অধিকার নেই, স্বেচ্ছাই পদত্যাগ করতে হবে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভিসি আসার সংবাদ পেয়ে আবরারের বাড়ির সামনে জড়ো হতে থাকে গ্রামবাসী। মুহূর্তেই কয়েক হাজার নারী-পুরুষ আবরারের বাড়ির সামনে অবস্থান নিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ওই গ্রামে যান উপাচার্য। সেখানে গিয়ে রায়ডাঙ্গা কবরস্থানে আবরারের কবর জিয়ারত করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়। ভিসিকে নিরাপত্তা দিতে কয়েকশ’ পুলিশের সঙ্গে সেখানে অবস্থান নিতে থাকে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

করব জিয়ারত শেষে আবরারের বাড়ির দিকে আসতে থাকে ভিসির গাড়িবহর। আবরারের বাড়ি ঢোকার মুখে ভিসির গাড়ির সামনে নারীরা শুয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দ্রুত গাড়ি ঘুরাতে থাকেন।

এ সময় হাজার হাজার নারী-পুরুষ ভুয়া ভুয়া বলে স্লোগান দিতে থাকে। পরে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের প্রহরায় জেলা প্রশাসকের গাড়িতে করে ওই এলাকা ত্যাগ করেন ভিসি।

ভিসির গাড়িবহর চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের সঙ্গে গ্রামবাসীর সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ লাঠিচার্জে আবরারের মামাতো ভাবি তমা গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে কুমারখালী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে গ্রামবাসীর প্রতিরোধের মুখে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়। পরে কয়েক ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন গ্রামবাসী।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019